ডেস্ক রিপোর্ট :
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব প্রয়াত হারিছ চৌধুরীর ডিএনএ টেস্ট শুধু অনলাইন চিঠির ওপর ভিত্তি করে করা যায় না। এক্ষেত্রে লিগ্যাল প্রসেস মেনে ডিএনএ টেস্ট করতে হবে।
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বেঙ্গল প্রেস’কেের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে এ কথা জানান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, হারিছ চৌধুরীর ডিএনএ টেস্টের বিষয়ে আমরা অনলাইনে একটি চিঠি পেয়েছি। কিন্তু এ চিঠির ওপর ভিত্তি করে অ্যাকশন নেওয়া যায় না। যে আইনজীবী রয়েছেন তাকে দিয়ে লিগ্যাল প্রসেস ফলো (যথাযথ প্রক্রিয়া) করেই আমরা ডিএনএ টেস্ট করবো। আইনের বাইরে আমরা যেতে পারবো না।
হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে চলতি মাসে নতুন করে আলোচনা শুরু হয় দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার একটি প্রতিবেদন ঘিরে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, হারিছ চৌধুরী মারা গেছেন এ কথা সত্য হলেও গত ১৪ বছর তিনি মাহমুদুর রহমান নাম নিয়ে ঢাকায়ই বাস করছিলেন।
এখন মাহমুদুর রহমান নামে যে ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে তিনিই হারিছ চৌধুরী কি না- তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিয়া চৌধুরীর দাবি- মাহমুদুর রহমানই হারিছ চৌধুরী। পরিচয় শনাক্তকরণের জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করতে সামিয়া চৌধুরী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন।
ওই চিঠিতে সামিরা নিজেকে হারিছ চৌধুরীর মেয়ে পরিচয় দিয়ে জানিয়েছেন, তার বাবার পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। এ কারণে তিনি চিঠিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তার বাবার ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে নিজের সম্মতির কথা জানিয়েছেন।
চিঠিতে সামিরা বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি হারিছ চৌধুরীর পরিচয় শনাক্ত করতে কোনো উদ্যোগ নেয়, তাহলে তাতে তার কোনো আপত্তি নেই।
তবে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়ায় আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলে তার নামে যে রেড ওয়ারেন্ট আছে, তা এখনো ঝুলছে।
সম্প্রতি হারিছ চৌধুরীর স্বজনরা জানিয়েছেন, হারিছ চৌধুরীই তার নাম-পরিচয় গোপন করে মাহমুদুর রহমান সেজেছেন। ওই পরিচয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রও তৈরি করেন। ইন্টারপোলের রেড নোটিশধারী হারিছ সব গোয়েন্দার চোখে ধুলো দিয়ে প্রায় ১১ বছর ঢাকায় অবস্থায় করছিলেন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর হারিছ চৌধুরীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হারিছ চৌধুরীর ৭ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ লাখ টাকা জরিমানা হয়। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলার একজন আসামি তিনি। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে হারিছ চৌধুরীর খোঁজে তার সিলেটের বাসায় অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তখন থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন।
টিটি/এমকেআর/এএসএম