ডেস্ক রিপোর্ট :
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) যাচাইয়ের জন্য আইটি বিশেষজ্ঞসহ তিনভাগে ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রোববার প্রথম ধাপে ১৩টি রাজনৈতিক দল আসার কথা থাকলে ১০টি দল এসেছে। তবে তাদের কেউই আইটি বিশেষজ্ঞ আনেননি। এমনকি প্রদর্শনের জন্য ইভিএম রাখা হলেও তা দেখেননি বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।
রোরবার (১৯ জুন) বিকেল ৩টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ইভিএম যাচাই করার জন্য ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করার জন্য চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন। চিঠিতে রোববার ১৩টি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ইসি।
গত ১২ জুন ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সই করা চিঠিতে বলা হয়, ইভিএমে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে কি না এবং এ মেশিন আরও উন্নত করা যায় কি না সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলের মতামত গ্রহণের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় করবে।
মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কমিশন ও ইভিএম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) কারিগরি বিশেষজ্ঞরা ইভিএমের কারিগরি ও ভোটগ্রহণসহ যাবতীয় বিষয় তুলে ধরবেন। এসময় রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা ইভিএম বিষয়ে তাদের মতামত ও পরামর্শ দেবেন। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তিনভাগে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভায় নিবন্ধিত প্রতিটি রাজনৈতিক দল থেকে আইটি বিশেষজ্ঞসহ সর্বাধিক চারজন সদস্য উপস্থিত থাকতে পারবেন।
চিঠিতে আইটি বিশেষজ্ঞসহ সর্বাধিক চারজনকে উপস্থিত থাকার জন্য দলগুলোর কাছে অনুরোধ করা হয়। তবে রোববার ১৩ দলের মধ্যে ১০টি রাজনৈতিক দল এলেও কেউই আইটি বিশেষজ্ঞ আনেননি।
রোববার বৈঠকে অংশ নেওয়া দলগুলো হলো- জাতীয় পার্টি (জাপা), জাতীয় পার্টি-জেপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, জাকের পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন এনডিএম ও বাংলাদেশ কংগ্রেস।
তবে আন্দালিব রহমান পার্থের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, ড. কামাল হোসের গণফোরাম ও কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ বৈঠকে আসেনি।
আইটি বিশেষজ্ঞ না আনার কারণ জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বেঙ্গল প্রেস’কেকে বলেন, আমরা আইটি বিশেষজ্ঞ আনিনি। দেশের মানুষ এখনো ইভিএমে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। জাতীয় পার্টি ইভিএমে ভোট চায় না।
সভা শেষে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএমের যুগ্ম মহাসচিব মোমিনুল আমীনকেই শুধু প্রদর্শনের জন্য রাখা ইভিএম যন্ত্রটি পরীক্ষা করতে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্টদের কাছে ইভিএম বিষয়ক নানান প্রশ্নের উত্তরও জানতে চান তিনি।
আইটি বিশেষজ্ঞের বিষয়ে তিনি বেঙ্গল প্রেস’কেকে বলেন, আমরা আজকে কোনো টেকনিক্যাল পার্সন সঙ্গে আনিনি। সভায় আমরা যে মতামত দিয়েছি তা যদি আমলে নেওয়া হয় তাহলে আমরা পরে আইটি বিশেষজ্ঞ নিয়ে আসবো।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জেপি) প্রতিনিধি রুহুল আমিন জানান, তারা কোনো টেকনিক্যাল এক্সপার্ট আনেননি।
একই কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ কংগ্রেসের চেয়ারম্যান কাজী রেজাউল হোসেন ও গণফ্রন্টের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন।
এদিকে, সভায় না আসা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি বিজেপির সভাপতি আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়। এটা ঠিক না করে ইভিএম নিয়ে আলাপ করলে ইসি ও তার দলের সময় নষ্ট হবে। তার মতে দলীয় সরকারের অধীনে ভালো ভোট সম্ভব না।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের সিদ্দীকির বলেন, ওনাদের সঙ্গে আমরা পরিচিতই হতে পারলাম না। তারা আমাদের ইভিএম যাচাইয়ের প্রস্তাব দিলো এটা কোনো কথা হলো।
গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সভা শেষে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যে কোনো সময় আইটি বিশেষজ্ঞ এনে ইভিএম দেখতে পারেন। সম্প্রতি শেষ হওয়া কুসিক ভোটেও ইভিএম নিয়ে কোনো বড় অভিযোগ আসেনি।
এসএম/আরএডি/কেএসআর