ডেস্ক রিপোর্ট :
পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে বসেছে পুরান ঢাকার ইফতার বাজার। এতে পুরান ঢাকার বিখ্যাত ‘মাস্টার সেফ সুবরাত আলী’র অন্তত ৩০টি ইফতার আইটেম পাওয়া গেলেও পুরান ঢাকার জনপ্রিয় ‘বড় বাপের পোলায় খায়’, ‘খাসির আস্ত রান’ এর দেখা মেলেনি।
জনপ্রিয়া এসব ইফতার সামগ্রীর দেখা না পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে একজন বিক্রয়কর্মী বলেন, ‘এখানে ওসব চলে না।’
রোববার (১৭ এপ্রিল) বসুন্ধরা কনভেশন সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, পুরান ঢাকার ইফতার বাজার নাম দিলেও ‘মাস্টার সেফ সুবরাত আলী’ নামের একটি ইফতার সামগ্রীর দোকান রয়েছে। তারা পুরান ঢাকায় ইফতার সামগ্রী বিক্রি করেন। এছাড়া ‘জসিম উদ্দিন ক্যাটারিং’ নামে আরেকটি পুরান ঢাকার ইফতারের দোকান রয়েছে। তবে বর্তমানে পুরান ঢাকায় তাদের কোনো শাখা নেই। এছাড়াও আরও বিভিন্ন ইফতার আইটেমের ১০ থেকে ১২টি মতো দোকান বসেছে সেখানে।
‘মাস্টার সেফ সুবরাত আলী’র দোকানে গিয়ে দেখা যায়, ৩০ পদের মতো ইফতার সামগ্রী বিক্রি করছেন তারা। একপিস নানরুটি তারা বিক্রি করছেন ৮০ টাকায়। সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে শাহী জর্দা ৫০ টাকায়। এছাড়া সর্বোচ্চ দামের মধ্যে রয়েছে ‘খাসির লেগ রোস্ট’ দেড় হাজার টাকা ও ‘খাসির আচারি গোস্ত’ দেড় হাজার টাকা কেজি। গরুর কালা ভুনা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা। জনপ্রিয় খাসির কাচ্চি বিরিয়ানি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা প্রতি প্লেট।
জানতে চাইলে ‘মাস্টার সেফ সুবরাত আলী’র ম্যানেজার মো. রাজিব বেঙ্গল প্রেস’কেকে বলেন, ভালোই বিক্রি হচ্ছে। দুই বছর করোনা ছিল। এবার বিক্রি হচ্ছে ভালোই।
কী ধরনের খাবার বেশি বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে দোকানটির এক কর্মী বলেন, কাচ্চি, সরিষার তেলের তেহারি, শাহী মোরগ পোলাও ও হালিম বেশি বিক্রি হচ্ছে।
রমজান এলেই ‘বড় বাপের পোলায় খায়’সহ পুরান ঢাকার বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী ইফতার আইটেমের নাম খুব আলোচনায় আসে। এখানে সেসব নেই কেন জানতে চাইলে ওই বিক্রয়কর্মী বলেন, এখানে ওসব চলে না। এসময় আরেক বিক্রয়কর্মী পাশ থেকে বলেন, আসলে ওসব ইফতার গরম গরম চলে। দ্রুত বিক্রি হয়ে যাওয়ার জিনিস ওগুলো। কিন্তু আমরা তো এখানে বিক্রি করি এসির ভেতরে, অনেক সময় নিয়ে। এখানে ওসব বিক্রির পরিবেশ নেই।
এছাড়াও পুরান ঢাকার ‘জসিম উদ্দিন ক্যাটারিং’ নামে আরেকটি ইফতারের দোকান রয়েছে। জানতে চাইলে দোকানটির বিক্রয়কর্মী মো. সোহেল বেঙ্গল প্রেস’কেকে বলেন, আমাদের পুরান ঢাকায় কোনো শাখা নেই। তবে উত্তরাতে রয়েছে। বিখ্যাত মাস্টার সেফ সুবরাত আলীর সাগরেদেরই দোকান এটি।
সেখানে দেখা যায়, ইফতার কিনতে এসে শুধু দেখে চলে যাচ্ছেন একাধিক ক্রেতা। আবার কেউ কেউ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে মধ্যবয়সী এক নারী জাগো প্রেস’কেকে বলেন, রাস্তার ওপারেই বসুন্ধরার ভেতরে আমার অফিস। ভাবছিলাম পুরান ঢাকা যাওয়া হয় না, তাই এখান থেকে নিয়ে যাই। কিন্তু এসে দেখলাম এখানে দাম অনেক বেশি। হাজার টাকায়ও চার-পাঁচ জনের ইফতার কেনা হবে না।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ভবনমালিক হাসমত আলী। নাতনিকে নিয়ে এসেছেন ইফতার কিনতে। খাসির কাচ্চি, আচারি গোস্ত, বিফ তেহারি, হালিম ও গরুর কালা ভুনা নিয়েছেন তিনি। এর আগের বছরগুলোতেও এখান থেকে ইফতার কিনেছেন বলে জানান তিনি। ওই ব্যক্তি সেখান থেকে পাঁচ-ছয় হাজারেরও বেশি টাকার ইফতার কিনছেন বলে জানান এক বিক্রয়কর্মী।
এমআইএস/ইএ/জিকেএস