ডেস্ক রিপোর্ট :
করোনা মহামারির আগে যে কোনো ঈদের সময় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বাড়তো গাড়ি বিক্রি। করোনার মহামারির শুরুর পর গত দুই বছর ঈদে সে ধারা ব্যহত হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে তেমন বাড়েনি গাড়ি বিক্রি।
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, মন্দা যাচ্ছে গাড়ি বিক্রির বাজার। শোরুমগুলোতে গাড়িও নেই। করোনার কারণে জীবন ও জীবিকা যখন হুমকির মুখে, তখন গাড়ির কেনার পরিকল্পনা অনেকেই পিছিয়ে দিয়েছেন। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হলেও ঈদের কারণে বাড়তি বেচাকেনা হচ্ছে না। ফলে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবসায় টানাপোড়েন কাটেনি।
দেশে নতুন ও রিকন্ডিশন্ড— দুই ধরনের গাড়ি বিক্রি হয়। তবে মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্তের কাছে রিকন্ডিশন্ড গাড়িই বেশি পছন্দের।
করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে নতুন ও রিকন্ডিশন্ড গাড়ি বিক্রির বিষয়ে বেঙ্গল প্রেস’কেের সঙ্গে কথা হয় বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি আবদুল হকের।
বারভিডা সভাপতি বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া এখন কিছুটা বেড়েছে গাড়ি বিক্রি। কিন্তু করোনা মহামারি শুরুর আগে ২০১৭/২০১৮ সালের ঈদে আমরা যেভাবে গাড়ি বিক্রি করেছি, সেই তুলনায় গাড়ি বিক্রি অনেক কম। মাঝে কিছু সময় ডলারের দাম বাড়ার কারণে গাড়ির দাম অনেক বেড়ে গিয়েছিল। সে কারণে গাড়ি সরবরাহে কিছু কম ছিল। অন্যদিকে আবার আগামীতে ইয়েনের দরপতনে শুল্ক ছাড়ের আশায় বন্দর থেকে গাড়ি ছাড় করাচ্ছেন না অনেক ব্যবসায়ী। সবমিলে গাড়ির সংকট ও ক্রেতা কমে থাকায় এ ঈদে ভালো যাচ্ছে না গাড়ির বাজার।
কয়েকদিন সরেজমিনে ঘুরেও গাড়ির বাজারে কেনাবেচা দেখা যায়নি। অধিকাংশ শোরুম দেখা গেছে ফাঁকা ফাঁকা। শোরুমগুলোতে গাড়ির সংখ্যা ও তুলনামূলক অনেক কম।
কাকরাইল মোড়ে ফ্যালকন অটোসে গিয়ে দেখা যায় শোরুমজুড়ে মাত্র চারটি গাড়ি। এতো বড় শোরুমে গাড়ি নেই কেন— জানতে চাইলে ম্যানেজার ফারুক হোসেন বলেন, ‘বিক্রি নেই, গাড়িও নেই। আগামী মাসে ডিউটি কমবে। সেজন্য গাড়ি ছাড়ানো হচ্ছে না। করোনা ছাড়া কখনো ঈদে এত কম বেচাকেনা হয়নি।’
অন্যদিকে, ইদানিং নতুন গাড়ির প্রতি আগ্রহ বেড়েছে ক্রেতাদের। হোন্ডা, মিতসুবিশি, হুন্দাই, সুজুকি, টাটা, মাহিন্দ্রাসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গাড়ি এ দেশে বিক্রি হয়। গত বছর (২০২১) তিন হাজার নতুন গাড়ি বিক্রি হয়েছে বলে জানা গেছে।
ঈদে নতুন গাড়ির বিক্রি খুব বাড়েনি। সুজুকি ব্র্যান্ডের গাড়ি বিক্রি করে উত্তরা মোটরস লিমিটেড। উত্তরা মোটরসের একজন কর্মকর্তা বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও গাড়ি বিক্রির বাজার পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। মধ্যবিত্তদের কাছে নগদ টাকা নেই। তারা সহজ ব্যাংক ঋণ পাচ্ছে না। সেজন্য বিক্রি কম।
এনএইচ/এমএএইচ/জেআইএম