ডেস্ক রিপোর্ট :
নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন ও ভাতা বাড়ানোসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সংহতি পরিষদ। শনিবার (১৬ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মো. আকরা খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানায় সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সংহতি পরিষদের মহাসচিব মো. আমজাদ আলী খান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বর্তমান প্রথম গ্রেড থেকে ২০ গ্রেডের ব্যবধান ৬৯ হাজার ৭৫০ টাকা। সরকার ২০০৯ সালে ৭ম জাতীয় পে-স্কেল বাস্তবায়ন করে। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে ৮ম পে-স্কেল প্রদান করেন। বর্তমান সময়ে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, পরিবহন ভাড়া, বাড়ি ভাড়াসহ সব ধরনের ব্যয় বেড়েছে। এ অবস্থায় সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৯ম জাতীয় পে-স্কেল বাস্তবায়ন অনিবার্য হয়ে পড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে যে ৭ দাবি তুলে ধরা হয়-১. জাতীয় স্থায়ী বেতন কমিশন গঠন করে বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ১৯৭৩ সালের ১০ ধাপে ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের পার্থক্য ১ : ৫ হতে হবে। আগের মতোই শতভাগ পেনশন প্রথা পুনর্বহাল করতে হবে।
২. ৯ম পে-স্কেল প্রদানের আগ পর্যন্ত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয় বিবেচনা করে অবিলম্বে ৫০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা দিতে হবে।
৩. সরকারি কর্মচারীদের আগের মতোই ৩টি টাইম ফেল, সিলেকশন গ্রেড ও বেতন সমতাকরণ পুনর্বহাল করতে হবে। জীবনযাত্রার মান সমুন্নত রাখার স্বার্থে এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয় বিবেচনা করে পেনশনের হার ৯০ শতাংশ থেকে শতভাগ ও গ্রাচ্যুইটির হার ১=২৩০ টাকার স্থলে ১=৪০০ টাকায় উন্নীত করতে হবে।
৪. এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি চালুসহ সচিবালয়ের মতোই সচিবালয়ের বাইরের সব সরকারি কর্মচারীদের সিলেকশন গ্রেডসহ পদবি ও বেতন বৈষম্য দূর করতে হবে। ব্লক পোস্টধারীদের পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
৫. আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীদের হয়রানিমূলক বদলি আদেশ, অত্যাচার-নির্যাতন বন্ধ ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। উন্নয়ন খাতে কর্মরত কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। প্রার্থী প্রথা চালুসহ সব দপ্তরের কর্মরত মাস্টার রোল, কন্টিজেন্ট ও ওয়ার্কচার্জ কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে।
৬. ক্যাডারে কর্মরত কর্মচারীদের মতোই প্রজাতন্ত্রের সরকারি কর্মচারীদের বিনা সুদে ৩০ থেকে ৫০ লাখ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ দিতে হবে।
৭. চাকরিতে প্রবেশ বয়সসীমা ৩২ বছর এবং অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৬২ বছর করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মতো সব দপ্তরে পোষ্য কোটা চালু করতে হবে।
এই সাত দফা দাবি নিয়ে আগামী ১১ মে ১০ সদস্যের একটি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করবে। পরে ঢাকায় মহাসমাবেশ করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি মো. মতিউর রহমান। উপস্থিত ছিলেন কার্যকরী সভাপতি আসকার ইবনে শায়েখ খাজা, সহ-সভাপতি মো. ইব্রাহীম, অতিরিক্ত মহাসচিব এইচ এম মতিউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক মো. তাজুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, অর্থ সম্পাদক সফি মো. রেজা, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হাসান আলী, ক্রীড়া সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, সহ-প্রচার সম্পাদক আল-আমিন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মাকসুদা বেগম, খদিজা বেগম প্রমুখ।
এমআইএস/কেএসআর/এএসএম