ডেস্ক রিপোর্ট :
বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। মঙ্গলবার (২২ মার্চ) যুক্তরাজ্যের লন্ডনের একটি হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশি আইনজীবীদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যার পর অপরাধীদের বিচারের পথ রুদ্ধ করতে চেয়েছিল। এজন্য আইন করে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হয়েছিল। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ আইনে পরিণত করে আত্মস্বীকৃত খুনিদের প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল। তারা দাম্ভিকতার সঙ্গে বলতো কেউ তাদের কিছু করতে পারবে না।
‘বঙ্গবন্ধু হত্যা, জেলহত্যা, বুদ্ধিজীবী হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে পুনর্বাসন ও পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হয়েছিল। মূলত এর মাধ্যমে বাংলাদেশে আইনের শাসনের পরিপন্থি ব্যবস্থা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল।আজ্ঞাবহ করে তোলা হয়েছিল বিচার ব্যবস্থাকে। আইনের শাসনকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছিল। অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ।’
শ ম রেজাউল করিম বলেন, ইনডেমনিটি আইন বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যা, জেলহত্যা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ সব অপরাধীর বিচার নিশ্চিত করে বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবসান হয়েছে বিচারহীনতার সংস্কৃতির। অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। এ সবই সম্ভব হয়েছে একজন সাহসী, আইনের শাসনে বিশ্বাসী, দেশপ্রেমী ও সৎ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কারণে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন কেউ অপরাধ করে দাম্ভিকতার সঙ্গে বলতে পারে না যে, তিনি বিচারের ঊর্ধ্বে। যে যে দল করুক, যে মতেই থাকুক, অপরাধ করলে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। শেখ হাসিনার দৃঢ়তার কারণেই বঙ্গবন্ধু হত্যা, জেল হত্যা, বুদ্ধিজীবী হত্যা, যুদ্ধাপরাধ, বিডিআর বিদ্রোহ, নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনাসহ সব অপরাধের বিচার হয়েছে। এমনকি দুর্নীতি করে সাবেক প্রধানমন্ত্রীও রক্ষা পাননি। ক্ষমতাসীন দলের নেতা হয়েও বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত আইনের শাসন। আইনের শাসনের পূর্ব শর্ত ভালো বিচার ব্যবস্থা। বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এর উন্নয়নের ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছে বর্তমান সরকার। বাংলাদেশে এখন কেউ অপরাধ করলে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়। কোনো রাজনৈতিক দল, মত, বিবেচনা না করে করে সবার জন্য আইনের সমান প্রয়োগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, দেশে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ও তার সহযোগীরা দেশের বাইরে থেকে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারে লিপ্ত। তাদের বিরুদ্ধে প্রবাসীদের সোচ্চার হতে হবে। বিদেশে অবস্থানরত দুর্নীতির দায়ে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এবং তার সহযোগীদের মিথ্যাচারপূর্ণ অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে প্রবাসী বাংলাদেশি আইনজীবীদের সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।
ব্যারিস্টার অনুকূল তালুকদার ডাল্টনের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- ব্যারিস্টার মহিউদ্দিন আহমেদ, ব্যারিস্টার চৌধুরী হাফিজুর রহমান, ব্যারিস্টার মনজুরুল ইসলাম, ব্যারিস্টার ইনামুল হক, ব্যারিস্টার কাজী শামসুল আহসান শুভ, ব্যারিস্টার মনিরুল ইসলাম মঞ্জু, ব্যারিস্টার সঞ্জয় কুমার রায়, ব্যারিস্টার আলমগীর হোসেন, অ্যাডভোকেট জান্নাতুল ফেরদৌসি রূপা, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন প্রমুখ।
আইএইচআর/আরএডি/জিকেএস