ডেস্ক রিপোর্ট :
প্রতিবছর রমজান মাসে রাজধানীসহ সারাদেশে প্রচুর ইফতারজাতীয় খাবার বিক্রি হয়। এ সুযোগে মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত লাভের আশায় খাদ্যে ভেজাল মেশায়। এসব খাদ্য এমন একটি নীরব ঘাতক, যা ধীরে ধীরে সুস্থ মানুষকে সুস্থ ধারা থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে। এতে দেশের অধিকাংশ মানুষ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছে।
এমতাবস্থায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনসহ (পবা) সমমনা ১০টি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে শনিবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর চকবাজার জামে মসজিদের সামনে ‘স্বাস্থ্যসম্মত ইফতারির নিশ্চয়তা চাই, ভেজাল ও বিষমুক্ত খাদ্য নিশ্চিতে চাই কর্তৃপক্ষের জোরালো ভূমিকা’ শীর্ষক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে অংশ নেওয়া বাকি সংগঠনগুরো হলো- পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগ, নগরবাসী সংগঠন, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ), মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্র, আলোকিত বন্ধু সংঘ, বিডি ক্লিক, দেবীদাস ঘাট সমাজ কল্যাণ সংসদ, সুবন্ধন সামাজিক কল্যাণ।
পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে ও সহ-সম্পাদক এম এ ওয়াহেদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- পবার সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুস সোবহান, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি নাজিমউদ্দীন, দেবীদাস ঘাট সমাজ কল্যাণ সংসদের সভাপতি মো. মুসা, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ’র সভাপতি আমির হাসান মাসুদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, রমজান মাসে ইফতারিতে যেসব খাদ্যপণ্যের সবচেয়ে বেশি চাহিদা সেগুলো হলো- শরবত, খেজুর, ছোলা, মুড়ি, বেসন, ডাল, দুধ, সেমাই, দেশী-বিদেশি ফল, শসা, টমেটো, বেগুন, লেবু, আটা ও ময়দা। রমজানের বাজার ধরার লক্ষ্যে এসব খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও মজুত করতে বিষাক্ত কেমিক্যাল, কৃত্রিম গ্রোথ হরমোন, ফরমালিন ও মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাপকহারে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা আমাদের ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে ও আগামী প্রজন্ম বিভিন্ন গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে বড় হচ্ছে। জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ইফতারিসহ সব খাদ্য বিষ ও ভেজালমুক্ত করতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট সবারকার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
তারা আরও বলেন, এমন কোনো খাদ্যদ্রব্য নেই যাতে মারাত্মক ক্ষতিকর বিভিন্ন কেমিক্যাল মেশানো হয় না। উৎপাদন থেকে বাজারজাতকরণ প্রত্যেকটি স্তরেই এর ছড়াছড়ি রয়েছে। সহজপ্রাপ্যতা আইন প্রয়োগ ও যথাযথ নজরদারির অভাবে এসব ঘটেই চলছে, এতে বিভিন্ন রোগের প্রার্দুভাব বেড়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় খাদ্য মন্ত্রণালয়কে ভেজাল খাবারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ও নিয়ম পালনে আন্তরিক হতে হবে। খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত সব প্রক্রিয়া পরিদর্শনের আওতায় আনতে হবে। সরকারের একার পক্ষে ভেজাল প্রতিরোধ সম্ভব নয়, এর সঙ্গে প্রশাসন ও জনগণের সম্পৃক্ততা জরুরি।
এমওএস/আরএডি/জিকেএস