ডেস্ক রিপোর্ট :
সহকর্মীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন সংসদে কর্মরত এক নারী। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার ওই নারী এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেন। যদিও হুমকি-ধমকিতে সেই জিডি তুলে নিতে বাধ্য হন ভুক্তভোগী। এরপর ওই নারী এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দেন সংসদ সচিব বরাবর। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে (সংসদ সচিবালয়ের কমিটি শাখা-৬ এ অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম) কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে।
শনিবার (৯ এপ্রিল) উপসচিব (ট্রেঅ্যান্ডপ্রি) এসএম মঞ্জুর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানো নোটিশ থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী সংসদ সচিবালয়ের কমিটি শাখা-৬ এ অফিসার মো. রফিকুল ইসলামের অধীনে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত। দায়িত্ব পালনকালে রফিকুল ইসলাম ওই নারীকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করছিলেন। সম্মান ও লোকলজ্জার কথা ভেবে ভুক্তভোগী তার ঊর্ধ্বতনকে অনুনয়-বিনয় করে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু রফিকুল ইসলাম উল্টো তাতে হত্যার হুমকি পর্যন্ত দেন এবং জিডি তুলে নিতে বাধ্য করেন।
এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে রফিকুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চিঠির পাওয়ার সাত কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী ওই নারী কর্মী বেঙ্গল প্রেস’কেকে বলেন, ‘ওই কর্মকর্তা জোর করে অনেকবার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছেন। অনেক অনুনয়-বিনয়, অনুরোধেও তাকে থামাতে পারিনি। চাকরি আর লোকলজ্জার ভয়ে দিনের পর দিন সহ্য করে গেছি। শুধু আমি নই, এখানে যেসব নারী বদলি হয়ে আসেন তাদের সঙ্গেও একই রকম ব্যবহার করা হয়। কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে সবাই চুপ থাকেন।’
ওই ভুক্তভোগীর স্বামীও সংসদের একজন কর্মকর্তা। তিনি বেঙ্গল প্রেস’কেকে বলেন, নিরাপত্তাহীনতায় আমরা সংসদ সচিব মহোদয়কে অবহিত করেছি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে লিখিত অভিযোগও করেছি। আসলে আমরা দুজনই ভেঙে পড়েছি মানসিকভাবে। লোকলজ্জার ভয়ে আর কতদিন এ ধরনের নির্যাতন সহ্য করা যায়। আশাকরি স্পিকার মহোদয় এর সুষ্ঠু বিচার করবেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো. রফিকুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) বেঙ্গল প্রেস’কেকে বলেন, ‘আমি আসলে তাকে শাসন করতে চেয়েছিলাম। এই বিষয়টিই বড় করে দেখা হচ্ছে। তবে আমার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে এটা ঠিক। এছাড়া সচিব স্যারের কাছে বিচারও দেওয়া হয়েছে। তাদের কাছেই এ ব্যাপারে জানতে পারবেন। আমি আর কিছু বলতে চাই না।’
সংসদের সিনিয়র সচিব কে এম আব্দুস সালাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বেঙ্গল প্রেস’কেকে বলেন, এ সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়ার পর তাকে শোকজ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এইচএস/এএ/জিকেএস