Bangal Press
ঢাকাSaturday , 11 November 2023
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. এক্সক্লুসিভ
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. চাকরির খবর
  8. জাতীয়
  9. তথ্যপ্রযুক্তি
  10. বিনোদন
  11. ভ্রমণ
  12. মতামত
  13. রাজনীতি
  14. লাইফস্টাইল
  15. শিক্ষা জগৎ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ঝিনুকের আদলে গড়ে তোলা দৃষ্টিনন্দন ‘আইকনিক রেলস্টেশনে’ যা থাকছে

ডেস্ক রিপোর্ট
November 11, 2023 6:27 am
Link Copied!

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র শহর কক্সবাজারবাসির আরও একটি স্বপ্নের বাস্তবরূপ পেতে যাচ্ছে। কক্সবাজারবাসির সেই বহু প্রতিক্ষিত রেল লাইন একটু পর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এই রেল লাইনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থাপনা দেশের প্রথম দৃষ্টিনন্দন আইকনিক রেলস্টেশন। অনেকটা ঝিনুকের আদলেই গড়ে তোলা হয়েছে রেলস্টেশনের অবকাঠামো।
এটা একই স্টেশন হলে পুরো একটি তারকামানের হোটেল। যেখানে থাকছে শপিংমল, কনভেনশন সেন্টার, রেস্টুরেন্ট, লাগেজ রাখার লকারসহ অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা। যা ইতোমধ্যে বিদেশিদের প্রাশংসা কুড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পর্যটন শহর কক্সবাজারে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের একমাত্র আইকনিক রেলস্টেশন। আক্ষরিক অর্থে ঝিনুক না হলেও সমুদ্র দর্শনে এসে প্রথম দর্শনেই সামুদ্রিক আবহ পাওয়া যাবে গোটা স্টেশনে। কেবল আসা-যাওয়ার জন্যই হয়নি এই স্টেশন, দেয়া হয়েছে এর বহুমাত্রিক রূপও। নান্দনিক ডিজাইন আর নির্মাণশৈলীর পাশাপাশি এর বহুমাত্রিক পরিধি নিয়ে গড়ে ওঠা এই স্টেশন পরিণত হয়েছে দর্শণার্থীদের বিনোদনের নতুন গন্তব্য।
সরেজমিন দেখা যায়, চোখ ধাঁধানো আইকনিক স্টেশন, সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে চারপাশে ব্যবহার হয়েছে কাঁচ। ছাদের উপর ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক স্টিল ক্যানোফি। ফলে দিনের বেলা বাড়তি আলো ব্যবহার করতে হবে না স্টেশনে। আর আধুনিক নির্মাণশৈলীর কারণেই একে বলা হচ্ছে গ্রিন স্টেশন।
একই সঙ্গে সুবিশাল চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে উঠে দোতলা থেকে নামতে হবে ট্রেনের প্ল্যাটফর্মে। আর আসার যাত্রীরা বের হবেন নিচ থেকে। যার জন্য প্রস্তুত ৪টি চলন্ত সিঁড়ি। স্টেশনের ভেতরেই রয়েছে ৭টি টিকিট কাউন্টার। আর চাইলেই নির্দিষ্ট লকারে ব্যাগ রেখে পর্যটকরা ঘুরে আসতে পারবেন পুরো শহর।
এই আইকনিক স্টেশনের স্থপতি মো. ফয়েজ উল্লাহ বলেন, ‘কক্সবাজার রেলস্টেশন ডিজাইন করার সময় একটা অনুপ্রেরণা নিই। ঝিনুক ও শামুকের গঠনটা বাহিরে থাকে, আর বাকি শরীরের অংশটুকু ভেতরে আবৃত থাকে। আমরা সেখান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে পুরো রেলস্টেশনটাকে একটা ছাউনি দিয়ে ঢেকে দিয়েছি।’
মো. ফয়েজ উল্লাহ বলেন, ‘এখন রেলস্টেশন শুধু যাত্রী যাওয়া-আসার জন্য নয়। এখানে আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে টেকসই করার জন্য নানা ধরনের ব্যবহারকে সংমিশ্রণ করা হয়। পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সুবিধা, রেস্টুরেন্ট, ফুডকোর্ট, মাল্টিপারপাস হল, হোটেল ব্যবস্থা রয়েছে। সুতরাং এটি শুধু রেলস্টেশন নয়; এটি একটা ডেস্টিনেশন। এটা একটা আকর্ষণীয় আর্থসামাজিক মডেল।’
তিনি বলেন, ‘চারদিকে গ্লাস লাগানো হচ্ছে। এখানে কোনো কৃত্রিম আলোর প্রয়োজন নেই। এ ছাড়া ছাউনিটা পুরো কাঠামোটাকে ঢেকে রেখেছে। ফলে সবসময় ভবনটি সহনীয় তাপমাত্রায় থাকবে। এতে কুলিং লোড কম হবে। ফলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের লোডও কম হবে। এতে এখান থেকে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।’
মো. ফয়েজ উল্লাহ আরও বলেন, ‘আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এই প্রকল্পটি পরিবেশগতভাবে টেকসই হিসেবে ডিজাইন করা। এখানে বৃষ্টির পানি থেকে শুরু করে পানি পুনর্ব্যবহার করা, বিদ্যুৎ সাশ্রয়, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থকাবে। এ ছাড়া পুনর্ব্যবহৃত টেকসই উপাদান ব্যবহার করছি। পানির জন্য কম অপচয় ওয়াটার ফিক্সচার ব্যবহার করছি। নানা রকম সুযোগ-সুবিধা আছে এখানে। বলা যায়, এই বিল্ডিংটা একটা পরিপূর্ণ গ্রিন বিল্ডিং।’
স্টেশনটি নির্মাণে ব্যবহার হয়েছে বিশ্বমানের সরঞ্জাম। নানা জটিলতা পেরিয়ে পরিপূর্ণতা পেয়েছে ভবনটি। আর রেলস্টেশনটি বিদেশিদের প্রশংসা কুড়িয়েছে বলে জানিয়েছে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর।
তিনি বলেন, দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হচ্ছে আইকনিক রেলস্টেশনটি। আইকনিক ভবনটি নির্মাণ অত্যন্ত জটিল ছিল। যেমন যে স্টিলগুলো দেখা যাচ্ছে, এই স্টিলগুলোর না যত দাম, এটা তৈরি করতে তার চেয়ে চার গুণ বেশি টাকা ব্যয় হয়েছে। সব মিলিয়ে আমরা টাকার দিকে তাকাইনি, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও সহযোগিতা করেছে।
ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, কক্সবাজারে নির্মিত আইকনিক রেলস্টেশনটি দেখে মুগ্ধ এডিবির শীর্ষ কর্মকর্তারা। তাদের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, এরকম সুন্দর ও নান্দনিক আইকনিক রেলস্টেশন বিশ্বে আর কোথাও নেই। এটা দেখে অন্যান্য দেশেও এরকম আইকনিক ভবন নির্মাণ করবেন; তা গর্বের সঙ্গে বলে গেছেন এডিবির কর্মকর্তারা।
এদিকে রাজধানী থেকে রাতের ট্রেন ধরে সকালে কক্সবাজারে পৌঁছে পর্যটকরা লাগেজ বা মালামাল স্টেশনের লকারে রাখতে পারবেন। সারাদিন সমুদ্রসৈকত বা পর্যটন স্পট ঘুরে রাতের ট্রেনে আবার ফিরতে পারবেন নিজ গন্তব্যে। এখন আইকনিক রেলস্টেশনটি প্রস্তুত। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মাধ্যমে ভ্রমণ পিপাসুদের প্রত্যাশা পূরণ হবে বলছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
আইকনিক রেলস্টেশন প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ম্যানেজার আবদুল জাবের মিলন বলেন, সমুদ্র সৈকত থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে ঝিলংজা এলাকায় ২৯ একর জমিতে ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন স্টেশন। আইকনিক এ স্টেশনটি নির্মাণে চীন, বেলজিয়াম, ইংল্যান্ড, ইতালিসহ বিশ্বের বিভিন্ন আধুনিক স্টেশনের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। পুরো প্রকল্পটিতে ছয় শতাধিক লোক কাজ করছে। ৪ বছরের বেশি শ্রমে আইকনিক রেলস্টেশন ভবনটি দৃশ্যমান। এখন প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন এই প্রত্যাশা আছি।
কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, যাত্রী অপারেশনের প্রস্তুত নান্দনিক নির্মাণশৈলীর বিশ্বমানের চোখ ধাঁধানো আইকনিক রেলস্টেশন। যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। মূলত আগামী ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে উদ্বোধন করবেন কক্সবাজারবাসির বহু কাঙ্খিত দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন। এরপর তিনি মহেশখালীতে গিয়ে জনসভায় বক্তব্য রাখবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। এবারের জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে।
শেখ হাসিনার জনসভা ও রেলপথ উদ্বোধন ঘিরে জেলাবাসীর মাঝে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল। 
তিনি বলেন, ‘যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজীকরণে পর্যটন নগরীর সঙ্গে রাজধানীসহ সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের দাবি ছিল আমাদের বহুদিনের। সেই স্বপ্নপূরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য আমরা তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ।’
দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন চালু হলে পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ঘটবে, বিকশিত হবে দেশের অর্থনীতি উল্লেখ করে সাইমুম সরওয়ার কমল আরও বলেন, ‘এখন থেকে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা সহজে এবং কম খরচে পর্যটন নগরীতে আসা-যাওয়া করতে পারবেন। কক্সবাজারকেন্দ্রিক উন্নয়ন প্রকল্পগুলো অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দেবে। প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়ন ঘটবে। সুফল পাবে সবাই।’
কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রীর আগমন ও জনসভা ঘিরে জেলা প্রশাসন এবং অন্যান্য বিভাগের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান। 
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারে ১৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং তিনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। সকাল ১০টায় আইকনিক রেলস্টেশন উদ্বোধন, সুধী সমাবেশ, ট্রেনে চড়ে রামু পর্যন্ত রেললাইন পরিদর্শন এবং দুপুরে মাতারবাড়ির জনসভায় ভাষণ দেবেন।’



শাকিল/সাএ

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।