একটু পরই সমুদ্র নগরী কক্সবাজার অঞ্চলের মানুষের অপেক্ষার অবসান ঘটবে। প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়ে রচিত হবে আরও একটি নতুন ইতিহাস। রেলপথে যুক্ত হবে আরও একটি জেলা। ইতোমধ্যেই নতুন দিগন্তের এই দ্বার খুলতে সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে এ অঞ্চলের মানুষ। এখন শুধু আবেগের ট্রেন যাত্রা বরণের পালা কক্সবাজারবাসীর।
চট্রগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার রেলপথের উদ্বোধন করতে বেলা ১১ টায় কক্সবাজারে পা রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সূর্য কিরণ দেওয়ার সাথে সাথে সেই মাহেন্দ্রক্ষণের প্রহর গুনছেন কক্সবাজারবাসী। পর্যটন নগরীর নতুন দিগন্তের এই দ্বার খুলতে ইতোমধ্যেই সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে এ অঞ্চলের মানুষ। এখন শুধু অপেক্ষা প্রধানমন্ত্রীর।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে বিমানযোগে কক্সবাজার বিমানবন্দরে নামবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বিশেষ নিরাপত্তায় গাড়ি বহরে যাবেন কক্সবাজার আইকনিক রেল স্টেশনে। সেখানে উদ্বোধন শেষে হেলিকপ্টার যোগে মাতারবাড়িতে একটি সমাবেশে যোগ দিবেন তিনি।
এদিকে গত কয়েকদিন থেকেই কাঙ্ক্ষিত এই রেলপথের উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো কর্তৃপক্ষ। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মঞ্চ তৈরিসহ সকল ট্রায়াল শেষ করা হয়েছে। কয়েক স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে কক্সবাজার ঘিরে।
কক্সবাজার জেলা শহর ঘুরে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নিতে সাজ সাজ রব গোটা কক্সবাজারে। সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দেরপাড়া এলাকায় আইকনিক রেলস্টেশনের পাশের সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে বিরাট তোরণ। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের চিত্র তুলে ধরে সাঁটানো হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুন। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলি ছেয়ে গেছে ব্যানারে পোস্টারে।
স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ী জিয়াউল হক জিয়া বলেন, আমাদের আবেগের যায়গা এটি। এবং খুব দ্রুত সময়েই এই উন্নয়নটা আমাদের হয়েছে। এর ফলে আমাদের কক্সবাজারের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে। আমরা এই ট্রেনের অপেক্ষায় আছি। কাল আমাদের জন্য একটা আনন্দের দিন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে জনসমুদ্র রূপান্তরের ঘোষণা দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ। জনসভায় লাখো মানুষের সমাগম ঘটবে জানিয়ে মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন,আমার নির্বাচনী এলাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসছেন এটা গর্বের বিষয়। দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী আসছেন মাতারবাড়ীতে। প্রথমে আসছিলেন বিরোধীদলীয় নেত্রী হিসেবে এখন আসছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। এর কারণেই এর গুরুত্ব অনেক। বিরোধীদলীয় নেত্রীর সফরকে তখন সেভাবে সফল করেছিল মহেশখালীর মানুষ। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এখন তার দ্বিগুণ সফল করবে বলে আশা করি।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে সকল দপ্তরের সাথে সমন্বয় করে করে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
উল্লেখ, প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন কক্সবাজার ঢাকা রেলপথ প্রকল্পটির কাজ ২০১৮ সালে শুরু হয়। আগামী বছরের জুন পর্যন্ত এই প্রকল্পের মেয়াদ থাকলেও তার আগে আগামী ডিসেম্বরের দিকে পুরোপুরি কাজ শেষ হবে বলছেন কর্তৃপক্ষ। আর এই রেলপথে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়ার সাহারবিল, ডুলাহাজারা, ঈদগাও, রামু, কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও ঘুমধুমসহ মোট স্টেশনের থাকছে ৯টি।
এ ছাড়া ৪৩টি ছোট সেতু, ২০১টি কালভার্ট, সাতকানিয়ার কেঁওচিয়া এলাকায় একটি ফ্লাইওভার, ১৪৪টি লেভেল ক্রসিং এবং রামু ও কক্সবাজার এলাকায় দুটি হাইওয়ে ক্রসিং রয়েছে।
শাকিল/সাএ