শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত সোহাগপুর বিধবাপল্লীর আরো ৬ জন বিধবা নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি পেয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত গেজেটে এ স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে।
স্বীকৃতি প্রাপ্তরা হলেন, সোহাগপুর গ্রামের সদ্য প্রয়াত ঝর্ণা দিও, সমিলা রাকসাম, মালতি রাকসাম, মোছাঃ হাজেরা, মোছাঃ লাকজান ও কেরেঙ্গা পাড়া গ্রামের মোছাঃ ছাহেরা খাতুন।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ৮৬তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক এই ৬ জন বিধবাকে বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। গত ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত ভিন্ন ভিন্ন গেজেটে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। এ নিয়ে ওই বিধবাপল্লীর ২০ জন নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি পেলেন।
এর আগে ১৪ জন নারী মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাওয়া ২০ জনের মধ্যে সদ্য প্রয়াত ঝর্ণা দিওসহ ৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
জানা গেছে, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে স্থানীয় রাজাকার আলবদরদের সহযোগিতায় পাক হানাদার বাহিনীর নরপিশাচরা ২৫ জুলাই সকালে নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের সোহাগপুর বেনুপাড়া গ্রামে নৃশংস গণহত্যা চালায়। সেদিন তারা দুইঘণ্টা তান্ডব চালিয়ে ১৮৭ জন পুরুষ মানুষকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে। সেই থেকে এই গ্রামটি বিধবাপল্লী নামে পরিচিত লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের জঘন্যতম এবং নৃশংসতম এই গণহত্যায় ওই গ্রামের ৬২ জন মহিলা অকালে স্বামী হারিয়ে বিধবা হন।
এমনকি তাদের অনেককেই শারীরিকভাবে নির্যাতন করে পাকবাহিনীরা। স্বাধীনতা পরবর্তী দীর্ঘদিন পর বর্তমান সরকার স্বামীহারা এসব বিধবাদের বীরাঙ্গনা তথা মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি প্রদান করে।
সালাউদ্দিন/সাএ