নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের মামলা তুলে নিতে গৃহবধূকে হুমকির অভিযোগ উঠেছে পৌর মেয়র মনিরুজ্জামান মনিরের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকালে নাটোর পৌর শহরের হাফরাস্তা এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তোলেন ওই গৃহবধূ।
লিখিত অভিযোগে গৃহবধূ জানান, ৪ জুন গৃহবধূ তার মামাশ্বশুরের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে পৌর ছাত্রলীগের ওয়ার্ড কমিটির সহ-সভাপতি নিশান প্রামাণিক (২৩) তার পথ রোধ করেন। তাকে মোটরসাইকেলে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। গৃহবধূ রাজি না হলে নিশান তাকে জড়িয়ে ধরেন এবং শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। এ সময় তার চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে নিশান পালিয়ে যান। এ নিয়ে রাতেই তিনি নিশান প্রামাণিকের বিরুদ্ধে নলডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। পুলিশ নিশানকে গ্রেফতারের পর ৫ জুন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
আরও পড়ুন: নাটোরে এমপি বকুলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
গৃহবধূ আরও জানান, মামলার পর নলডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান নিশান প্রামাণিকের পক্ষ নেন। তিনি মামলাটি তুলে নিতে গৃহবধূ ও তার স্বামীকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিয়ে আসছেন। শুধু তাই নয় বৈঠকে বসে ওই গৃহবধূর বাবাকে এক ঘরে করার ঘোষণাও দেন মেয়র। এমনকি চাপ দিয়ে গৃহবধূর মাকে দিয়ে আদালতে মিথ্যা জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছেন। এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি পুলিশ সুপারের কাছে নিরাপত্তা চান।
অভিযোগের বিষয়ে মেয়র মনিরুজ্জামান মনির ক্যাম্পাসনিউজকে বলেন, ‘মেয়র হিসেবে পক্ষ বিপক্ষের কেউ আমার কাছে আসতেই পারে। যেহেতু আমি জনপ্রতিনিধি, তাই পৌর এলাকার চলমান বিবাদ মীমাংসার অংশ হিসেবে তাকে (গৃহবধূ) শুধু আপসের অনুরোধ করেছি।’
মোবাইল ফোনে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে মেয়র বলেন, ‘শান্তভাবে অনুরোধ করা, হুমকি নয়।’
মেয়র উল্টো অভিযোগ করে বলেন, ‘নলডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের শরিফুল ইসলাম পিয়াসের রেলওয়ের জায়গা অবৈধভাবে দখলের প্রতিবাদ করে নিশান। তাই নিশানকে ঘায়েল করতেই পিয়াসের পরামর্শেই এমন মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে ওই মেয়ে সম্পর্কে এলাকাবাসী তার কাছে নানা অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন।’
এদিকে শরিফুল ইসলাম পিয়াস এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি এসব ঘটনায় জড়িত না।
এ বিষয়ে নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম ক্যাম্পাসনিউজকে বলেন, ‘মামলা হওয়ার পর আসামিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদীকে মেয়র মনিরুজ্জামান হুমকি দিচ্ছেন কি না আমাদের জানা নাই। এ রকম ঘটনা ঘটলে বাদী থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে পারেন।
রেজাউল করিম রেজা/এসজে/জিকেএস