দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের কাছে দুদকের তদন্ত সমাধান করে দেবে বলে অর্থ দাবির ঘটনায় এক ভুয়া দুদক কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের একটি টিম। গ্রেফতারকৃতের ঐ ব্যক্তির নাম মোঃ রেজওয়ান।
বুধবার (১৯ জুন) সকালে রাজধানীর মিরপুর-১০ থেকে তাকে গ্রেফতার করে অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম। এ সময় তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন, ১টি ল্যাপটপ ও ১টি পকেট রাউটার উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গত ১৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান দুদক কর্মকর্তার বিষয়টি ভুয়া বলে সন্দেহ হলে উপাচার্যের পক্ষে ইবি থানায় জিডি করেন।
জিডিতে বলা হয়, গত মাসে সেফাত উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক গোপালগঞ্জ পরিচয় দিয়ে এক হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার ড. শেখ আবদুস সালাম এর নাম্বারে ফোন দিয়ে তার বিরুদ্ধে দুদকে দায়েরকৃত অভিযোগ নিষ্পত্তি করে দিবেন শর্তে ২০,০০০ টাকা উৎকোচ দাবী করে।
পরে উপাচার্য হজ্ব পালন শেষে দেশে ফিরে এলে গত ৪ ও ৫ ই জুলাই ২০২৩ ইং তারিখে উপাচার্যের হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে একই নাম্বার থেকে বহুবার ফোন করা হয় এবং ওয়ার্টসঅ্যাপ ম্যাসেঞ্জারে আবার একই দাবি করা হয়। জিডি করার ৪ দিনের মাথায় ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করলো বিএনপি পুলিশ।
অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া সহকারী পুলিশ কমিশনার শিপ্রা রাণী দাস বলেন, প্রতারক রেজওয়ান দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নাম, পদবী ও ছবি ব্যবহার করে হোয়াটস অ্যাপে একাউন্ট খোলে। এরপর বিভিন্ন পত্রিকা থেকে সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত বিভিন্ন অফিসের অনিয়ম সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে জড়িত ব্যক্তিদের টার্গেট করতো। পরবর্তীতে টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের ফোন দিয়ে তাদের নামের অভিযোগ নিষ্পত্তি করার কথা বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা দাবি করতো।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃত রেজওয়ান স্বল্প শিক্ষিত। নানা কারণে পড়াশোনা বন্ধ করে অল্প পরিশ্রমে অধিক টাকা আয় করার দিকে পথ বাড়ায়। এর আগেও বেশ কয়েকবার গ্রেফতার হয়ে জেলে থাকার পর জামিনে মুক্ত হয়ে পুনরায় একই কাজ করে আসছে।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বাহান্ন নিউজকে বলেন, দুদকের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি আমার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে ফোন দিয়ে গত মাসে টাকা দাবী করেন। হজ্জ শেষে দেশে ফিরলে আবার একই নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে বারবার টাকা দাবি করা হয়। বিষয়টা আমার কাছে সন্দেহজনক মনে হলে আইনের আশ্রয় নিতে থানায় জিডি করি।