মোঃ মনিরুল ইসলাম, আমতলী (বরগুনা) থেকে: আমতলী-ঢাকা রুটে যাত্রী সংকটে গত এক মাস ধরে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমতলী, তালতলী, বরগুনা, কলাপাড়া ও পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা নৌপথের যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন লঞ্চ ঘাটের শ্রমিক, হকার। তাছাড়া বিপাকে পড়েছেন এই নদী পথে মালামাল আনা-নেওয়া করা ব্যবসায়ীরাও।
জানা যায়, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর আমতলী থেকে সড়কপথে মাত্র ছয় ঘণ্টায় ঢাকা পৌঁছানো যায়। কিন্তু লঞ্চে সময় লাগে বেশি। সড়ক পথে ঢাকায় কম সময়ের মধ্যে কম ভাড়ায় যাতায়েত করা যায়। আমতলী-ঢাকা রুটে স্থলপথে বাস ভাড়ার চেয়ে লঞ্চে ভাড়া অনেক বেশি। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও বাজে সার্ভিসের কারণে লঞ্চে যাত্রী সংকট দেখা দিয়েছে। এতে যাত্রী সংকটে পড়েন লঞ্চমালিকেরা। যাত্রী সংকট চরম আকার ধারণ করায় আমতলী-ঢাকা রুটে লঞ্চ চলাচল অনিয়মিত হয়ে পড়ে। কয়েক মাস ধরে অনিয়মিত ভাবে একটি লঞ্চ চলাচল করলেও গত ২০ জুলাই মালিকপক্ষ সেটিও বন্ধ করে দেয়।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ করে বলেন, লঞ্চ বন্ধ থাকায় ঢাকা থেকে স্বল্প খরচে দক্ষিণাঞ্চলে মালামাল আনা-নেওয়া করতে পারছেন না তাঁরা। ফলে বেশি খরচ দিয়ে তাঁদের মালামাল আনা–নেওয়া করতে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে দ্রব্য মূল্যের ওপর। দ্রুত লঞ্চ চালুর দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সোমবার আমতলী লঞ্চঘাট সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, একদম সুনসান নীরবতা। ঘাটে দোকান পাট বন্ধ। নেই যাত্রীদের কোলাহল। লঞ্চ টার্মিনাল ফাঁকা। টার্মিনালে জেলেরা নৌকা বেঁধে রেখেছেন। লঞ্চের যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা জানান, লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়াতে খুব কষ্টে আছি। দ্রুত আমতলী-ঢাকা নৌ রুটে লঞ্চ সার্ভিস চালুর দাবি জানান তাঁরা।
ঘাট এলাকার ব্যবসায়ী কামাল খান, ইউনুচ খান, ইব্রাহিম, ফোরকান, মামুন ও রুবেল জানান, লঞ্চ বন্ধ হওয়ার পর তাদের দোকানে মালামাল বিক্রি হয় না। সারা দিনে যে কয় টাকা বিক্রি হয় তা দিয়ে কিস্তির (ক্ষুদ্র লোন) টাকা পরিশোধ করতে পারিনা। ঘাটের শ্রমিকদেরও একই আকুতি। তারা বলছেন, লঞ্চ বন্ধ থাকলে তাদের পণ্য পরিবহনের কাজও বন্ধ থাকে দৈনিক মজুরির শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।
আমতলী লঞ্চঘাটের সুপার ভাইজার শহীদুল ইসলাম বলেন, লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় আমতলী-ঢাকা নৌপথের যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। এছাড়াও লঞ্চঘাটের অন্তত শতাধিক শ্রমিক কঠিন সংকটে পড়েছে। তাঁরা পরিবার পরিজন নিয়ে অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।
ইয়াদ লঞ্চের মালিক মামুন-অর রশিদ বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি ও যাত্রী সংকটে লোকসানের মুখে গত এক মাস ধরে লঞ্চ বন্ধ করে রেখেছি। ওই রুটে দৈনিক এক লাখ টাকা লোকসান গুনতে হয়।
সালাউদ্দিন/সাএ