শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় তিন মাস বয়সী শিশু সন্তানকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে রূপা নামের এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে। রবিবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে ভেদরগঞ্জ থানার ওসি ওবায়দুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে গতকাল শনিবার রাত ১২টার দিকে উপজেলার মধ্য ছয়গাঁও এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিশুটি ওই এলাকার চাঁনমিয়া সরদারের মেয়ে। খবর পেয়ে রোববার দুপুরে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় ভাবে জানা যায়, চাঁনমিয়ার স্ত্রী রূপা আক্তার বিয়ের পর হঠাৎ করেই মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। এতে তাদের সংসারে অশান্তির সৃষ্টি হয়। এরপর থেকেই রূপা তার মায়ের সঙ্গে থাকতেন। তিন মাস আগে রূপা রাত্রী ও আদিত্য নামে দুই যমজ সন্তানের জন্ম দেন। শনিবার রাতে হঠাৎ করে চাঁনমিয়ার পরিবারের কাছে খবর আসে, রাত্রী নামে কন্যা শিশুটি মারা গেছে। এ ঘটনার পর শিশুটির বাবা চাঁনমিয়া অভিযোগ করেন, তার মেয়েকে কান্নাকাটি করায় বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেছেন রূপা আক্তার।
রাত্রীর দাদি জাহানারা বেগম বলেন, রূপা ভারসাম্যহীন হওয়ায় রাত্রী আর আদিত্য জন্ম নেওয়ার পর বাচ্চা দুটিকে আমাদের কাছে দিয়ে দিতে বলেছিলাম। কিন্তু রূপার মা আমাদের কাছে বাচ্চাদের দেয়নি। উনি সেদিন বাচ্চাগুলোকে আমাদের দিয়ে দিলে আজ এই ঘটনা ঘটতো না।
নিহতের ফুফু তাহমিনা বেগম বলেন, আমার ভাবি বাচ্চাদের রেখে বাজারে বাজারে ঘুরে বেড়াতেন। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় আমরা ধারণা করছি, কান্নাকাটি করায় শিশুটিকে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলেছেন।
মৃত্যু বিষয়টি সকালে এলাকায় জানাজানি হলে ঘটনাস্থলে গিয়ে রূপা ও তার মা শোভনা বেগমকে পাওয়া যায়নি। তবে তাদের এক প্রতিবেশী মিজানুর রহমান জানান, রাতে তারা শিশুটির কান্নার আওয়াজ পেয়েছিলেন। এর কিছুক্ষণ পর তারা দেখেন শিশুটি মারা গেছে বলে খবর পেয়ে বাবাসহ অন্য স্বজনরা এসেছেন। এরপর সুযোগ বুঝে শিশুটির মা ও নানি পালিয়ে যান।
এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হক বলেন, খবর পেয়ে আমরা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি। তবে সুরতহালে শিশুটির শরীরে কোনোরকম আঘাতের চিহ্ন পাইনি। বাকিটা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে বলা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
শাকিল/সাএ