বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত দেশের স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জন্য সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত ‘প্রত্যয় স্কিম’ প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার,সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তকরণ এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো মানববন্ধন করেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
রবিবার (২৬ মে)সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষক সমিতির ব্যানারে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সরকারের সর্বজনীন পেনশন নীতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্তকরণ এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবি জানান। এর আগে গত ১৫ মে(বুধবার) একই দাবিতে মানববন্ধন করে শিক্ষক সমিতি।
মানববন্ধনে বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড.উজ্জ্বল কুমার প্রধান বলেন ‘সরকারের ‘বৈষম্যমূলক’ পেনশন নীতির বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ জেগে উঠেছে। বাংলাদেশ যেন সামনের দিকে এগিয়ে যেতে না পারে তারই একটি অপচেষ্টা করা হয়েছে সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমের মাধ্যমে। ‘
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন ’সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম সরকারের বেতনভুক্ত সকল চাকুরিজীবীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না হয়ে শুধু স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হচ্ছে। এটি এক ধরনের বৈষম্যমূলক অবস্থান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে এক ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি করেছে যা সরকারের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। আমি সরকারকে এই ‘বৈষম্যমূলক ’প্রজ্ঞাপন বাতিল করে সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তকরণ এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবি জানাই। ’
শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. তুষার কান্তি সাহা বলেন, ‘জাতিকে মেধাশূন্য করা জন্য প্রত্যয় স্কিম একটি গভীর ষড়যন্ত্র। প্রত্যয় স্কিম চালু হলে মেধাবীরা শিক্ষকতায় আসবেনা, আর মেধাবীরা শিক্ষকতায় না আসলে জাতি ধীরে ধীরে মেধাশূন্য হবে। জাতিকে মেধাশূন্য করে কখনই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা যাবেনা।’
এসময় দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারের সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত ‘প্রত্যয় স্কিম’ প্রজ্ঞাপন বাতিল না করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের কর্তৃক ঘোষিত ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখা সহ সকল কঠোর কর্মসূচি পালন করার হুশিয়ারিও প্রদান করেন শিক্ষক নেতারা।
উল্লেখ্য, গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, দেশের সব স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা ও তাদের অধীন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলোর চাকরিতে যে-সব কর্মকর্তা বা কর্মচারী চলতি বছরের ১ জুলাই ও তার পরে নতুন যোগদান করবেন তাদের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং তাদের ক্ষেত্রে উক্ত প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার জন্য বিদ্যমান অবসর সুবিধাসংক্রান্ত বিধি-বিধান প্রযোজ্য হবে না। এরপর থেকেই সারা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এই প্রজ্ঞাপনটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
