Bangal Press
ঢাকাThursday , 27 July 2023
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. এক্সক্লুসিভ
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. চাকরির খবর
  8. জাতীয়
  9. তথ্যপ্রযুক্তি
  10. বিনোদন
  11. ভ্রমণ
  12. মতামত
  13. রাজনীতি
  14. লাইফস্টাইল
  15. শিক্ষা জগৎ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মানসিক প্রশান্তির খোরাক ‘ধর্মচর্চা’

Link Copied!

‘নিঃসন্দেহে দুশ্চিন্তার সব চাইতে বড়ো চিকিৎসা হচ্ছে ধর্ম বিশ্বাস’ বলেছেন আমেরিকার বিখ্যাত দার্শনিক উইলিয়াম জেমস। মানসিক রোগ দূরীকরণে ধর্মচর্চার কোনো বিকল্প নেই। মানসিক প্রশান্তির জন্য ধর্মীয় অনুশীলন খুবই প্রয়োজন। শুধু ধন-সম্পদ ও সামাজিক মর্যাদা মানুষের আত্মার প্রশান্তি, সুন্দর জীবন ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারে না। বরং এগুলো ক্রমান্বয়ে মানুষকে বিলাসী করে তোলে।
একসময় বিলাসিতা অতিবিলাসিতায় পৌঁছে যায়। ফলে অনেকে বিভিন্ন রকমের মানসিক রোগে ভুগে। তখনই মানুষ ধন-সম্পদ ও পদের অপব্যবহার করতে থাকে। কিন্তু একনিষ্ঠভাবে সৃষ্টিকর্তার ইবাদত মাধ্যমে মানুষকে সংযত করে। মানুষের মাঝে নৈতিকতা ও মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলে। এছাড়া, ধর্মচর্চা মানুষকে অন্যায়-অবিচার করার প্রবণতা থেকে নিয়ন্ত্রণ করে।
প্রতিটি ধর্মে বলা আছে সৃষ্টিকর্তার ইবাদতের মাধ্যমে নিজেকে জানা যায়, চেনা যায়। সমাজকে রক্ষা করতে এবং মানবতাকে জাগিয়ে তুলতে ধর্মচর্চার কোনো বিকল্প নেই। আমেরিকান সাইকোলজিস্ট Henry C. Link একটি গবেষণাগ্রন্থে ১০ হাজার মানুষের ওপর ৭৩ হাজার বারের মতো পরীক্ষমূলক অনুসন্ধান পর ফলাফল দেন, “যারা নিয়মিত প্রার্থনালয়ে যাতায়াত করেন এবং একনিষ্ঠভাবে ধর্মচর্চা করেন, তারা ধর্মহীন (নাস্তিকের) চেয়ে অধিক ব্যক্তিতের অধিকারী এবং জীবন আত্মিক প্রশান্তি ও স্থিতিশীলতায় বসবাস করেন।” তাহলে যাদের ধর্ম আছে তারা যেমন মানবতার পাশাপাশি সমাজের অবক্ষয় দূরীকরণে কাজ করতে পারে।
আমরা যে মূল্যবোধের কথা বলছি, এর মূল উৎস কিন্তু ধর্ম। ধর্মের মধ্যেই জীবনাচারণের সব আদর্শিক বিষয়গুলো উল্লেখ আছে। আর সেই ধর্মীয় চর্চার মধ্যেই জীবনের উৎকর্ষ সাধন করা সম্ভব। ধর্মচর্চার মাধ্যমে ভুল এবং সঠিক বিষয়টি জানা যায়। ধর্মীয় বিধিবিধানে এসবের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে মানুষ বিশেষ করে বর্তমান প্রজন্ম অনেক দূরে। সমাজে ধর্মচর্চার প্রবণতা কম, ফলে ন্যায়বোধ সমাজ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। তাই আমেরিকান লেখক Dela Carnegie তার গ্রন্থে Dr. Brail এর একটি মন্তব্য করেন, “একজন সত্যিকারের ধর্মপরায়ণ ব্যক্তি কখনোই মানসিক রোগে আক্রান্ত হতে পারে না।”
যারা ন্যায়বোধকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে, তাদের দ্বারা সমাজের উন্নতি সম্ভব হতে পারে না। মানুষকে নিয়ন্ত্রণের জন্যে ধর্মীয় শিক্ষার মধ্যে যে ন্যায়বোধের কথা বলা হয়েছে, সেটিই কিন্তু সবচেয়ে বড় শক্তি। অর্থাৎ ধর্মচর্চা যদি দুর্বল হয়, তাহলে সেই ন্যায়বোধও দুর্বল হয়ে পড়বে। তখন সেটা সমাজে কিংবা ব্যক্তিজীবনে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
আমরা একটি বিষয় লক্ষ্য করলে জানতে পারব, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করোনার পরে মানুষের মাঝে মানসিক চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ কভিড-১৯ পর অনেকে ধর্মচর্চা থেকে দূরে সরে গিয়েছে। বাংলাদেশে একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে উত্তর-অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিষণ্নতার হার ৪৯.৬%, উদ্বেগ ৫৩.২% এবং চাপ ২৬.৪%। তবে বিভিন্ন গবেষণায় এটাও দেখা যায় বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি মানসিক চাপে থাকেন মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা। ২০১৭ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা বিষণ্নতায় থাকেন ৫৪.৩%, উদ্বেগ থাকেন ৬৪.৮% এবং চাপে থাকেন ৫৯%।
এছাড়া, বিশ্বে বিভিন্ন দেশে মানসিক চাপ আরও বেশি লক্ষ্য করা যায়। ফলে মানুষের মাঝে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে আত্মহত্যা। ওয়ার্ল্ড জনসংখ্যা রিপোর্ট অনুসারে হাজারে দক্ষিণ আফ্রিকার লেসেথো দেশে আত্মহত্যা হার ৭২.৪%, ২য় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ গায়ানা, ৩য় এবং ৪র্থ অবস্থানে রয়েছে সোয়াজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ কোরিয়া। সেদিক থেকে বাংলাদেশ আত্মহত্যার দিক থেকে হাজারে ৩.৭%। যেদেশে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা হয় সেই দেশে আত্মহত্যার হার খুবই কম। কারণ ধর্মীয় আইনে রয়েছে আত্মহত্যা মহাপাপ, সেক্ষেত্রে তারা এই পাপ থেকে দূরে থাকেন। যারা ধর্ম নিয়ে মগ্ন থাকেন তাদের মাঝে আত্মহত্যার হারও কম রয়েছে।
মানসিক প্রশান্তির জন্য আমাদের করণীয় কি? এসব ক্ষেত্রে উদ্ভূত বিষয়গুলো কেবল কিছুটা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা যেতে পারে। এমতাবস্থায় সামাজিক অবক্ষয় কিংবা নীতি-নৈতিকতার অবক্ষয়রোধের জন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে উদ্যোগী ভ‚মিকা হতে হয়। এখানে রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। প্রথমে পরিবার থেকে সন্তানদের ধর্মচর্চা, ধর্মীয় বিধি-বিধান ও নীতি-নৈতিকতার শিক্ষা দিতে হবে। প্রতিটি ধর্ম মানুষকে মানবতার কথা বলেছেন। কিন্তু অনেক সেই ধর্মকে অপব্যাখ্যা করে, তারা কিছু উক্তিকে মানুষের সামনে তুলে ধরে যেগুলো সম্পর্কের তাদের সঠিক জ্ঞান নেই। অনেকে আবার ধর্মকে পুজিঁ করে অপব্যাখ্যা করে। 
নিজেদের পবিত্র ধর্মেগ্রন্থ অধ্যয়নের মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তাকে খোঁজে বাহির করতে হবে। তাহলে নিজেকে পাওয়া যাবে। ধর্মচর্চার মাধ্যমে নিজেদের পাশাপাশি সত্যও জানা যায়। সকল ধর্মের প্রচারকরা মানববতার কথা বলেছেন। ধর্মচর্চার মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার সাথে আত্মার সর্ম্পক করতে হবে, তাহলে মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যাবে। তাই বেশি বেশি ব্যক্তিগত ইবাদত করা দরকার। পাশাপাশি ধ্যান ও শরীরচর্চার ফলে মস্তিষ্কের ডোপামিন ও সেরোটোনিন নামক রাসায়নিক উপাদান নিঃসৃত হয় যা মানসিক অবসাদ দূর করতে সহায়তা করে এবং মনে প্রশান্তি আনে। পরিশেষে, ধর্মীয় অনুশাসন ও নৈতিকতা পারে সকল মানসিক অবসাদ দূর করতে।



সালাউদ্দিন/সাএ

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।