Bangal Press
ঢাকাTuesday , 13 February 2024
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. এক্সক্লুসিভ
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. চাকরির খবর
  8. জাতীয়
  9. তথ্যপ্রযুক্তি
  10. বিনোদন
  11. ভ্রমণ
  12. মতামত
  13. রাজনীতি
  14. লাইফস্টাইল
  15. শিক্ষা জগৎ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কেটে সাবাড় করা হচ্ছে রামগড়ের পাহাড় ও কৃষিজমি, দায় কার?

ডেস্ক রিপোর্ট
February 13, 2024 4:52 am
Link Copied!

খাগড়াছড়ির রামগড়ে অবৈধভাবে পাহাড় এবং কৃষি জমির মাটি কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে একটি মাটি খেকো চক্র। চক্রটি উন্নয়নকাজের দোহাই দিয়ে দিনে-রাতে প্রকাশ্যেই চালাচ্ছে ধ্বংসযজ্ঞ। দীর্ঘদিন ধরে লাগাতার এ ধ্বংসযজ্ঞ চললেও লোক দেখানো দুয়েকটি অভিযানেই সীমাবদ্ধ প্রশাসন। ফলে প্রভাবশালী বেপরোয়া এ চক্রটির বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাচ্ছেনা কেউ। কেউ কথা বলতে চাইলে তাকে হেনস্তা প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে চক্রটির বিরুদ্ধে।
ইতোমধ্যে রামগড়ে ১৫-২০টি পাহাড় এবং শতশত হেক্টর কৃষি জমির মাটি কেটে সাবাড় করা হয়েছে। এ মাটি বিক্রি করে অনেকে হয়েছেন আঙুল ফুলে কলাগাছ। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী পাহাড়কাটা অবৈধ হলেও তা তোয়াক্কা করছেন না কেউ। ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩’ অনুযায়ী কৃষি জমির মাটি কাটার কঠোর আইন থাকলেও সেদিকে ভ্রূক্ষেপ নেই কারোর।
রামগড় পৌরসভার ৫ নং চৌধুরীপাড়া এলাকার বৈদ্যটিলা নামক স্থান থেকে দেদারসে অবৈধভাবে কাটা হচ্ছে পাহাড়। থেমে থেমে এস্কেভেটর (ভেকু) দিয়ে চলে এ পাহাড় কাটা। পাহাড়ের মাটি পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হয় ১৮-২০টি বড় ড্রাম ট্রাক। প্রতি রাতে ২৫০-৩০০ গাড়ি মাটি বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গা ভরাটের কাজে। এতে প্রতি ফুট মাটির মূল্য নেওয়া হচ্ছে ১০টাকা করে। ১শত ফুটের এক গাড়ি মাটির মূল্য ১ হাজার টাকা। এছাড়াও রামগড় পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের জগন্নাথ পাড়া, চিন ছড়ি পাড়া, বল্টুরামটিলা এলাকায় পাহাড় কাটা হচ্ছে। ৭নং ওয়ার্ডের বলিটিলা, বাগানটিলাসহ পৌর এলাকার বাহিরেও দেদারসে কাটা হচ্ছে পাহাড়।
এদিকে নতুন করে মাটি কাটার তাণ্ডবলীলা শুরু হয়েছে মহামুনি বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন পাশের বিলে। এখানে নতুন উদ্যমে পানি সেচের সরকারি ড্রেন ভেঙ্গে প্রায় ১৫০ একর কৃষি জমির মাটি কাটার অ্যাজেন্ডা নিয়েছে মাটি খেকো এই চক্রটি। ২টি স্কেভেটর এবং ২০-২৫টি ড্রাম ট্রাক দিয়ে মাটি কাটা শুরু হয়েছে এখানে। ৮-১০ ফুট গভীর করে নেওয়া হচ্ছে মাটি। প্রতিদিন রাত ১২টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত চলে এ মাটিকাটা। কয়েক হাজার মানুষের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন এ বিলে প্রায় ২০০ একর জমি রয়েছে। এভাবে কৃষি জমি ধ্বংস করায় ফসল উৎপাদন ব্যাপকহারে হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রামগড় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘কৃষিজমির মাটি কেটে নেওয়ার ফলে সেখানে ফসল উৎপাদন হ্রাস পাবে। কোন অবস্থাতেই কৃষিজমির মাটি কাটা উচিত নয়। এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
এসব অভিযোগের তীর রামগড় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারী, পৌরসভার ১ নং পৌর কাউন্সিলর আব্দুল হক এবং ৩নং কাউন্সিলর জিয়াউল হকের দিকে। এ একই অভিযোগে অভিযুক্ত রয়েছেন আরাফাত ও আবু বক্কর নামে আরও দুজন।
অভিযোগ নিয়ে রামগড় পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জিয়াউল হক জিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, ‘এখানে মূলত ৩-৪টি গ্রুপ মাটি কাটার সাথে জড়িত। উপজেলা চেয়ারম্যান সরাসরি জড়িত নয়। তবে উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশে সবাই মিলেমিশে কাজ করছে। এখানে অনেক গ্রুপের লোকজন রয়েছে। ৪-৫ জন করে কয়েক গ্রুপে কাজ ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। সবারই তো আশাভরসা থাকে।’
১নং পৌর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল হক বলেন, ‘আপনি কে? মাটি কাটার বিষয়ে আমি আপনাকে কেন বলব? আপনি ঠিকাদারের সাথে গিয়ে কথা বলেন। এক পর্যায়ে তিনি প্রতিবেদককে অফিসে গিয়ে দেখা করতে বলেন এবং চা খাওয়ার দাওয়াত দেন।’ অভিযুক্ত অপর ২জন আরাফাত এবং আবু বক্করকে এ বিষয়ে কথা বলতে কল দিলে তাদের নাম্বারে সংযোগ দেয়নি।’
অভিযোগের বিষয়ে রবিবার রামগড় উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারীর অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। উনার দুটি মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠালে তিন ঘণ্টা পর তিনি ফিরতি বার্তায় জানান ‘নাম্বার সেভ ছিল না। আমি ঢাকায় আছি, আগামীকাল আসব। আসার পরে কথা হবে।’ এরপর তিনি ঢাকা থেকে ফিরলেও প্রতিবেদকের সাথে আর কথা বলেননি।
খাগড়াছড়ি জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩ অনুযায়ী আবাদযোগ্য জমির উপরিভাগ কর্তন করা এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কেউ যদি এই অপরাধ সংঘটিত করেন এর জন্য দুই বছরের সাজা ও অর্থদণ্ড রয়েছে। যেহেতু এটি মোবাইল কোর্টের তফশিল ভুক্ত অপরাধ তাই যারা এসব জমি বা পাহাড় কাটার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের উচিত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া।’
অবৈধভাবে পাহাড় ও কৃষিজমির মাটি কাটায় উপজেলা প্রশাসনের নীরব সমর্থন রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী। যার জন্য অবাধে পাহাড় ও কৃষিজমি ধ্বংস করা হলেও কোন আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেনা প্রশাসন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রশাসন।
রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতা আফরিন বলেন, ‘যেখানেই আমরা পাহাড় কাটা অথবা কৃষি জমির মাটি কাটার অভিযোগ পেয়েছি সেখানেই আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। যেখানে রাতের ১টা বাজে মাটিকাটা হয় সেখানে মোবাইল কোর্ট করার বিধান আমাদের নেই। তখন কোন সমস্যা হলে আমাদের নিরাপত্তা দিবে কে?’
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদের আইনের আওতায় আনব।’



সালাউদ্দিন/সাএ

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।