Bangal Press
ঢাকাThursday , 8 June 2023
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. এক্সক্লুসিভ
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. চাকরির খবর
  8. জাতীয়
  9. তথ্যপ্রযুক্তি
  10. বিনোদন
  11. ভ্রমণ
  12. মতামত
  13. রাজনীতি
  14. লাইফস্টাইল
  15. শিক্ষা জগৎ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

স্টেডিয়াম নির্মাণের নামে পদ্মা থেকে বালু তুলে বিক্রির অভিযোগ

Link Copied!

ফরিদপুরে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই পদ্মা নদী থেকে রাতের আঁধারে খননযন্ত্র দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গত প্রায় ছয় মাস ধরে এ ব্যবসা চললেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

এর ফলে হুমকিতে রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পৌনে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ। ঝুঁকি রয়েছে বন্যারও। এ সত্ত্বেও সদর উপজেলার আলীয়াবাদ ইউনিয়নের ভাজনডাঙ্গা, গদাধরডাঙ্গী ও কাদেরের বাজার এলাকার গোয়ালন্দ-তাড়াইল সড়কের পূর্বপাশে অন্তত পাঁচটি জায়গায় স্তূপ করে প্রতিদিন বালু বিক্রি করা হচ্ছে। ট্রাকে করে দিনেরাতে ওই বালু যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। অভিযোগ রয়েছে, ফরিদপুরে একটি ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণের নামে এই বালু তুলে অবৈধভাবে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ফরিদপুর শহর রক্ষা বাঁধের সীমানা ঘেঁষে পদ্মা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত মান্দারতলা খালের উত্তরে ভাজনডাঙ্গায় দুই একর জমিজুড়ে প্রায় ১৫ ফুট উঁচু করে রাখা বালুর স্তূপ। সেখান থেকে এস্কেভেটর দিয়ে ট্রাকে লোড দিয়ে বালু বিক্রি করা হচ্ছে মামা-ভাগ্নে এন্টারপ্রাইজের নামে। নদী থেকে বালু তুলে বলগেটে ভরে এনে খালাসের পরে প্রতি ঘনফুট দুই টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

জানা গেছে, মামা-ভাগ্নে এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. এমদাদুল হক। তার সঙ্গে অংশীদার আছেন মক্কা এন্টারপ্রাইজের মো. মুক্তার হোসেন ও মদিনা এন্টারপ্রাইজের মো. টিটু।

এ বিষয়ে এমদাদুল হকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার অংশীদার টিটু বলেন, স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য সাইনবোর্ড এলাকা থেকে সাগর, হেলাল ও তুহিন বালু তুলছে। সেখান থেকে বালু কিনে আমরা প্রতি ঘনফুট ৫০ পয়সা বেশি দাম দিয়ে বিক্রি করি।

তিনি জানান, একটি বলগেটে পাঁচ থেকে ছয় হাজার ঘনফুট বালু ধরে। প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার ঘনফুট বালু বিক্রি হয়। এই মামা-ভাগ্নে চাতালের একশ গজ সামনেই রয়েছে হিরুর চাতাল। প্রতীক হাসান প্রান্ত নামে এক যুবক বলেন, বাৎসরিক চুক্তিতে তাদের পৈত্রিকসূত্রে পাওয়া দুই একর জমি বালু ব্যবসায়ী হিরুর কাছে ইজারা দিয়েছেন।

সাদীপুর বাজার পার হয়ে কাদেরের বাজার সংলগ্ন মজিবর বিশ্বাসের বালুর চাতালের ব্যবসায়িক অংশীদার সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, এ ব্যবসায়ে তারা প্রায় ২০ জন অংশীদার। তিনি শুধু আর্থিক হিসাব দেখেন। তবে চাতালের মালিক আলিয়াবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সাদী। তিনিই সব নিয়ন্ত্রণ করেন।

রফিকুল ইসলাম ক্যাম্পাসনিউজকে বলেন, ফরিদপুরে একটি স্টেডিয়াম হবে বায়তুল আমান টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সামনে। তার জন্য আলিয়াবাদের চর গজারিয়া সাইনবোর্ড এলাকায় পদ্মা নদী থেকে ড্রেজিং করে বালু তুলে স্তূপ করা হচ্ছে। আমরা সেখান থেকেই বালু এনে ব্যবসা করেছি। এ জায়গাটি একজনের কাছ থেকে বাৎসরিক দেড় লাখ টাকায় ইজারা নেওয়া।

তার কিছুদূরে পদ্মা সংলগ্ন সাইনবোর্ড এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ১৫ একর জায়গা জুড়ে অট্টালিকার মতো পাহাড় করে স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য বালুর স্তূপ দিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, পদ্মা নদীতে দুটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ১২ ফুট পাইপ দিয়ে বালু তোলার জন্য সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।

ওই কাজের শ্রমিকরা জানান, এই ড্রেজার মেশিনের মালিক চরভদ্রাসন উপজেলার দিপু খান নামে এক ব্যক্তি। রাতে তারা মেশিন চালান। ১৬০ হর্স পাওয়ারের একটি মেশিন তিন ঘণ্টা চালিয়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার ঘনফুট বালু তোলা যায়। সরাসরি পাইপের মাধ্যমে চাতালে বালুর স্তূপ করা ছাড়াও বলগেটেও বালু লোড দেওয়া হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পদ্মা নদী থেকে এ বালু তুলে বিক্রির সঙ্গে জড়িত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সাদী, সহ-সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন সম্রাট, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম ও মজিবর বিশ্বাস।

তবে বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নন দাবি করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সাদী ক্যাম্পাসনিউজকে বলেন, আমার একটি জমি বালু রাখার জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছে। চলতি মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে আর ইজারা দেব না। তার দাবি, অনেক আগে থেকেই এই বালু তোলা হচ্ছে। আগে আখতারুজ্জামান বিশ্বাসের নেতৃত্বে তোলা হতো।

তবে আকতারুজ্জামান বিশ্বাস ক্যাম্পাসনিউজকে বলেন, দুই বছর আগে নদী খনন করেছিল বিআইডব্লিউটিসি। ওই সময় আমি নদী থেকে তোলা বালু তুলে রাখার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। সেই বালু পরে সরকার নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করেছে। এখন আমি এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত না।

এদিকে, পদ্মা নদী থেকে এভাবে বালু তোলার ফলে স্থানীয়রা ভোগান্তিসহ নদী ভাঙনের হুমকিতে আছেন। স্থানীয় বাসিন্দা মুন্নু ভূঁইয়া ক্যাম্পাসনিউজকে বলেন, রাতে যখন মেশিন চালায় ঘুমাতে পারি না। বিকট শব্দ আর মেশিনের কম্পনে নদীর পাড়সহ ঘর পর্যন্ত কাঁপতে থাকে। এই বালু ব্যবসায়ীদের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি।

তিনি বলেন, অবৈধভাবে এই বালু তোলার ফলে আমাদের জায়গাজমি পদ্মায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বালুর পানি চুঁইয়ে নদীতে পড়ায় নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা রোজি আক্তার ক্যাম্পাসনিউজকে বলেন, চাতাল থেকে বালুর পানি চুঁইয়ে আমাদের বাড়ির আঙিনায় জমা হচ্ছে। চলাচলের রাস্তাও নেই।

এ বিষয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটন ঢালী বলেন, পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। জনস্বার্থে বালু তোলা হলে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে করতে হয়। এ বিষয়ে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। আমরা জানতে পেরেছি, একটি স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য বলা হলেও বালু তুলে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।

ফরিদপুরে শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হকের উদ্যোগে নির্মাণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে জনতে চাইলে তিনি বলেন, বায়তুল আমান এলাকায় টিসার্স ট্রেনিং কলেজের পাশে শেখ কামালের নামে একটি একটি ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদ থেকে আড়াই একর জমি ইজারা নেওয়া হয়েছে। ওই জায়গা ভরাট করার জন্য বালু তোলা হচ্ছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের মৌখিক সম্মতি আছে। তবে কোনো বালু বিক্রি করা হচ্ছে না। তারপরও খোঁজ নিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে বালু তোলার মৌখিক অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদারের মোবাইলফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

 
এন কে বি নয়ন/এমআরআর/জিকেএস

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।