চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার ধন্যঘরা গ্রামের ফল ব্যবসায়ী বাবর আলীকে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। তাকে হত্যা করেন তার স্ত্রী মহিমা খাতুন।
পুলিশ জানিয়েছে, মহিমা খাতুন তার স্বামীকে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেই অজ্ঞান হয়ে যান এবং অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে পুলিশ তাকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যায় ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র হাঁসুয়া উদ্ধার করা হয়।
রোববার (১১ জুন) দুপুরে দর্শনা থানায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা।
নিহত বাবর আলী দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের ধান্যঘরা গ্রামের দক্ষিণপাড়ার মৃত আব্দুল সাত্তারের ছেলে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দিনগত রাত পৌনে ১টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় বাবর আলীকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে পালিয়ে যায় বলে জানান স্ত্রী মহিমা খাতুন। সেই রাতেই বাবর আলীকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ১টা ৪০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এরপর দিন নিহত বাবর আলীর ভাই ছাবের আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় ঘুমন্ত ফল ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা
সংবাদ সম্মেলনে এএসপি জাকিয়া সুলতানা বলেন, হত্যার পরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। স্ত্রী মহিমা খাতুনের আচরণে তাদের সন্দেহ বাড়ে। পরে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে স্বামীর হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন তিনি। তবে এ ঘটনায় তার সঙ্গে কেউ জড়িত নয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই তার শয়নকক্ষের খাটের নিচ থেকে হত্যাকাণ্ডের ব্যবহৃত হাঁসুয়া উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মহিমা খাতুন তার স্বামীকে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেই অজ্ঞান হয়ে যান এবং অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে পুলিশ তাকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে।
মহিমা তার স্বীকারোক্তীতে জানিয়েছেন, স্বামীর অজান্তেই বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিতেন তিনি। প্রতিমাসে মোটা অংকের টাকা সুদ হিসেবে বহন করতে হতো বাবর আলীকে। এতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ বাড়ে। এরই জের ধরে ঘুমন্ত স্বামীর গলায় হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন মহিমা। পরে নিজেই আতঙ্কিত হয়ে পড়লে হত্যায় ব্যবহৃত হাঁসুয়া লুকিয়ে রাখেন এবং চিৎকার-চেঁচামেচি করেন। পরে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে এলে রক্তাক্ত অবস্থায় বাবর আলীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিছুক্ষন পর তার মৃত্যু হয়।
নিহত বাবর আলীর ছেলে মাহিন বলেন, ‘রাতে মা আমাকে ঘুম থেকে ডেকে বলেন, তোর বাবা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কে বা কারা মেরে ফেলেছে। এরপরই দ্রুত প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় বাবাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে তিনি মারা যান।’
হুসাইন মালিক/এসআর/এমকেআর